Yellowstone – জীবনের সেরা ঘোরার অভিজ্ঞতা !
জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা মানুষের হয়, যা সে কোনোদিন ও ভুলতে পারেনা ! আমার জীবনের সেইরকম ই এক অভিজ্ঞতা হলো Yellowstone এর যাওয়া কে ঘিরে ! যাওয়ার দিন 5-এক আগে পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা ই ছিলোনা ! হঠাৎ ই, আমার এক চেনা বাঙালি দাদা এসে বললো যে – “আগামী কদিন ছুটি আছে, তো চল একটু ঘুরে আসি !” সেই কথা মাত্র চট জলদি আলোচনা করে সব আয়োজন করে নেওয়া হলো !

যাওয়াটা শুরু হলো সেপ্টেম্বর 2018 এর শেষ সপ্তাহ তে ! বৃহস্পতিবার দুপুরের খাওয়া সেরে আমরা রওয়ানা দিলাম ! আমার বাড়ি – সান রামোন এ, যা US-এর মধ্যে ক্যালিফর্নিয়া নামের রাজ্যের অন্যতম বড়ো শহর ! আমার বাড়ি থেকে Yellowstone যেতে গাড়িতে সময় লাগে প্রায় 19 ঘন্টার কিছু বেশি ! অবশ্য এর মধ্যে আমাদের রাস্তায় মাঝে-মাঝে কিছু সময় লেগে যাবে খেতে, আর তার মধ্যে অন্য কোথাও বিশ্রাম নিতে ! কারণ একটানা কেও 19 ঘন্টা গাড়ি চালাতে পারবেনা !

সেই মতো আমরা ঠিক করলাম, যে প্রথম দিন আমরা Twin Falls এর কাছে হাইওয়ে এর ধারে একটা হোটেল এ থাকবো ! যাতে পরের দিন সকালে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যেতে পারি !

যেমন কথা, তেমন কাজ ! কিন্তু লম্বা ছুটির জন্য আমাদের রেনো পৌঁছাতেই লেগে গেলো প্রায় সন্ধে 9 টা ! তাই সেই মতো আমরা ঠিক করলাম যে সন্ধে বেলায় ডিনার টা ওখানেই সেরে নেবো ! একটা ভালো হোটেল খুঁজে ডিনারটা শেষ করে নিলাম ! আমার পক্ষে সঠিক হোটেল টা খুঁজে পাওয়া খুব একটা মুশকিল হয়নি তার কারণ, কয়েকদিন আগেই আমার এক বন্ধুর বিয়ে ঐখানেই হয়েছিল ! সাধারণত, এই শহরে পৌঁছাতে লাগে সাড়ে 4 ঘন্টা আমার বাড়ি থেকে ! কিন্তু সেই দিন লাগলো প্রায় সাড়ে 7 ঘন্টা !

রেনো তে আমরা ঘন্টা দেড়েক থেকে আবার রওয়ানা দিলাম !  এইবারে ইন্দ্রনীল দা, ইউটুব থেকে রেডিও মির্চি এর সানডে-সাসপেন্স চালিয়ে দিয়ে গাড়ি কে 150 এর বেগে টানলো ! সে আরেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা ! চারিদিক এ ঘুটঘুটে অন্ধকার, পাহাড় গুলো যেন ওই রাতের অন্ধকারে আমাদের গিলে খেতে আসছে ! তার মধ্যে, একটার পর একটা ভুতের গল্প শুনতে শুনতে এগিয়ে যাওয়া !

রেনো ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারিদিক এর মাঠ-ঘাট এর পরিবর্তন দেখতে শুরু করলাম ! প্রায় আরো 6 ঘন্টার পর, অবশেষে আমরা পৌছালাম আমাদের সেই হোটেল এ ! রাত তখন 12 টা বাজে !

পৌঁছানোর পর দেখলাম যে হোটেল এর দরজা বন্ধ ! এমন কি রিসেপশন এও কেও নেই ! শেষ পর্যন্ত ইন্দ্রনীল দা, ওদের কে ফোন করলো ! প্রায় 10 মিনিট পরে, একজন ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের কে রুম-এর চাবি দিয়ে গেলেন ! চাবি নিয়ে আমরা সোজা আমাদের রুম-এ গেলাম ! প্রথমে, গরম শাওয়ার এ একটু স্নান করার পর ক্লান্তি টা দূর হলো ! তারপর শুয়ে পড়লাম ! তার কারণ, পরের দিন আমাদের ভোর 6 টায় উঠতে হবে ! সকালে উঠে আমাদের দুজনের তৈরী হতে বেশি সময় লাগলো না ! ঠিক 7 টার মধ্যে আমরা জলখাবার খেয়ে নিলাম ! ইন্দ্রনীল দা, ফ্লাস্ক এ খানিকটা চা ভরে নিলো ! আর আমাদের গাড়িতে কিছু কাগজ এর কাপ আছে ! তাই যেতে যেতে বেশ রসিয়ে খাওয়া যাবে বাকি কেক, কুকিজ, বিস্কুট আর ঝাল মটর ভাজা, চানাচুর ও চিপস এর সাথে ! জার্নি চলাকালীন মুখের মধ্যে মুখরোচক কিছু থাকলে, সেটা আরো বেশি আকর্ষণীয় হয় ! গাড়ি আবার ছুটতে শুরু করলো ! 

যেদিকেই তাকাই না কেন অদ্ভুত সুন্দর সেই দৃশ্য ! চারিদিক এ ধু-ধু করছে মাঠ ! আর দূরে পাহাড় ! মাঝখান দিয়ে বুক চিরে সোজা এগিয়ে চলেছে এই রাস্তা ! এই রাস্তার মজাটা হচ্ছে এই যে – যদিও এর শেষ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু এই শেষ টা আমাদের পৌঁছাতে লাগলো প্রায় 3 ঘন্টা ! যেখানে গাড়ি আমাদের চলছিল ঘন্টায় 150 মাইল এর কাছে ! সুতরাং, বুঝতেই পারছো যে এই দেশটা ঠিক কতটা বড়ো !

অবশেষে, আমরা পৌছালাম উয়োমিং বলে আরেকটা রাজ্যে, যে রাজ্যের খানিকটা জুড়ে এই জাতীয় অরণ্য টা আছে ! এই অরণ্য টা যে এতো বড়ো, সেটার হিসাব দিতে গেলে আমার বলা উচিত যে, প্রায় পশ্চিমবঙ্গ আর বিহার কে যোগ করলে যত বড়ো জায়গা হয়, ততটা জায়গা জুড়ে !

Wyoming এর বিশেষত্ব হলো এই যে – এখানে লোকের প্রধান জীবিকা হলো চাষবাস ! তাই সারি দিয়ে ফসল এর খেত ছড়িয়ে আছে ! তার থেকে সবুজ আর হলুদ এর আভা যেন দৃশ্য টা আরো কয়েকশো গুন্ রঙিন করে তোলে ! আর, সেই মেজাজ কে তুলে ধরতে গাড়িতে চলতে লাগলো পুরোনো সোনালি দিনের বাংলা সিনেমা এর সুপারহিট গান ! 

অবশেষে, দীর্ঘ 7 ঘন্টা গাড়ি চলার পর আমরা পৌছালাম Yellowstone এ ! এইবার আমাদের শুরু হবে অজানা খোঁজের এডভেঞ্চার ! কিন্তু, তার আগে আমাদের আরেকটা কাজ করে নিতে হবে !

এই হোটেল এর সব থেকে মজার বিষয় হলো, এখানে এসে আমরা ট্রাডিশনাল মিড্-ওয়েস্ট এর খাবার দিয়ে জলখাবার টা সারলাম ! স্যান্ডউইচ, হাফ-বয়েল ডিম্, ঝুড়ি-ঝুড়ি আলু ভাজা, বেকন আর তার সঙ্গে সেই জায়গার প্রস্তুত করা কফি দিয়ে ! খাবার বড়োই সুস্বাদু !

আমরা ঠিক করলাম যে ওখানে পৌঁছে আগে হোটেল এর চাবিটা জোগাড় করে নেবো ! তারপর আমরা একটু ফ্রেশ হয়ে বেরোবো !

সেই কথা মতো ইন্দ্রনীল দা যখন বাথরুম এ গেলো, আমি ঘুরে ঘুরে হোটেল টা দেখতে থাকলাম !

জায়গাটা দেখলে মনে হবে পুরোনো দিনের কোনো হলিউড মুভি এর থেকে উঠে আসা – “ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট” এর সেট !

এছাড়াও, আমাদের ঘরের সামনে বারান্দায় বসে প্রায় প্রতিদিন রাতে আমরা সময় কাটিয়েছি হাথে কফি নিয়ে !

আর হোটেল এর নিচে একটা গিফটশপ আছে ! সেখান থেকেও আমি কয়েকটা জিনিস কিনলাম বাড়ির জন্য !

প্রথম দিন এ পৌঁছানোর প্রায় এক ঘন্টা পর কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম ! আমাদের হোটেল থেকে পশ্চিম Yellowstone এর মেইন গেট মাত্র 10 মিনিট দূরে ! সুতরাং, পৌঁছাতে বিশেষ সময় লাগলো না ! এরপর, টিকেট কেটে সুন্দর জঙ্গল এর মধ্যে চলতে শুরু করলাম ! সরু এক লেন এর রাস্তায় দুদিক সারি-সারি গাছ আর ওপরে নীল আকাশ ! তার মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি !

পরবর্তী দুদিন আমরা প্রায় প্রতিটা নামকরা জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছি ! বারবার মনের মধ্যে এই চিন্তা টা ছিল যে আদেও আমরা এতবড়ো জায়গার সব কিছু ঘুরে দেখতে পারবো কিনা !

প্রথম নজর কারা জায়গাটা হলো – “ম্যামথ হট স্প্রিং” এবং তার চারপাশের অপূর্ব উপত্যকা ! যেন দেখলে চোখটা জুড়িয়ে যায় ! এতোক্ষনের আসার সব আয়োজন, ক্লান্তি নিমেষে কেটে গেলো ! কি অসাধারণ এই জায়গা! ভাবাই যায় না !

ওপরের এই ছবিটা দেখলে হয়তো মনে হতে পারে যে এখানে বরফ এর চাদরে ঢাকা ! আসলে, এখানে সালফার এর নানানরকম যৌগ পদার্থ তৈরী হয়ে, এইরকম একটা সাদা চাদরের আস্তরণ তৈরী করেছে !

পরবর্তী জায়গা যাওয়ার আগে আমরা ঠিক করলাম – আগে দূর থেকে দেখে নিয়ে তারপর কাছ থেকে দেখবো ! সেই করতে হলে আমাদের কে প্রায় 5 মাইল পাহাড়ের ওপর সব মালপত্র নিয়ে চড়ে তারপর দেখতে হবে ! যদিও আমার কাঁধে ক্যামেরা এর ব্যাগ এর ওজন প্রায় 12 থেকে 14 কেজি, তবুও রাজি হয়ে গেলাম ! শুরু হলো – খাড়া পথ দিয়ে ওঠা ! পা ফস্কে পড়লেই বিপদ ! যদিও অধিকাংশ জায়গায় মোটা স্টিল রড দিয়ে বাধা আছে, কয়েকটা জায়গা ছাড়া ! অবশেষে উঠে যখন সেই দৃশ্য টা দেখলাম, আবার সব কিছু জুড়িয়ে গেলো ! জায়গাটির নাম হচ্ছে – “গ্রান্ড প্রিজমটিক হটস্প্রিং” !

এমন বাহারে রং এর জায়গা এর আগে কখনো দেখিনি ! পুরো এই জায়গাটা হচ্ছে পাহাড় এর মুখ ! যার নিচে জমে আছে কয়েক কোটি টন লাভা ! আর এই নানান রঙের উৎস হলো ভয়ঙ্কর সব অ্যাসিড ! অথচ, কি সুন্দর ই না দেখতে ! সত্যি, জগৎ কতই বিচিত্র ! আর এই জায়গাটা ঘুরে দেখার জন্য এরা কাঠ দিয়ে কিছু পাটাতন করে রেখেছে ! তার ওপর দিয়ে সবাই হাঠছে ! আমি আমার টেলিফোটো লেন্স টা বার করে ছবি তুললাম ! ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হয়ে গেলো !

এরপর আমরা ঠিক করলাম যে কাছ থেকে গিয়ে দেখবো ! জায়গাটা যেতে হলে একটা নদী পেরোতে হবে, আর সেটার জন্য একটা বেশ বড়ো কাঠের পোক্ত ব্রিজ আছে ! যেখানে একসাথে কম করে দেড়শো লোক ধরে যাবে ! আর এই জায়গাটায় সারাক্ষন মাটি থেকে নানান রঙের ধোয়া উঠে আসছে ! তার জন্য সোনালী রোদ এ একটা অদ্ভুত মায়াবী দৃশ্য সৃষ্টি করেছে ! মনে হচ্ছে যেন কোন এক অজানা দুনিয়ায় এসে পড়েছি !

যেই সেই ব্রিজ পেরিয়ে আস্তে-আস্তে কাঠের পাটাতন এর ওপর দিয়ে যাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রঙের ধোয়া এসে এক অদ্ভুত দুনিয়ার অভিজ্ঞতা আমার সামনে তুলে ধরছে ! অবশেষে, এসে পৌছালাম সেই ভয়ঙ্কর অথচ সুন্দর জায়গাটিতে ! যা সত্যি, ভাষায় প্রকাশ করা যায়না !

আমার বৃত্তান্ত পরে আর ছবি দেখে আপনাদের কি মনে হচ্ছে জানান ! আমি অপেক্ষা করে রইলাম !

এর পরের খুব সুন্দর জায়গা হলো – “লামার ভ্যালি” ! এই জায়গাটা বিখ্যাত পশু পাখির অবাধ বিচরণভূমি বলে পরিচিত ! এখানে কেও কোনো পশু বা পাখিকে তার সাধারণ জীবন যাপনে বাধা দেয় না ! এমনকি জঙ্গল এর ভেতরে রাস্তায় যদি এরা চলেও আসে, সব গাড়ি এদের জন্য সারি হয়ে অপেক্ষা করবে, যতক্ষণ না এরা আবার বনের দিকে ঢুকে যাচ্ছে ! তার থেকেও বড়ো হলো, নিস্তব্ধতা! কোনো আওয়াজ নেই কোথাও ! এই জায়গায় এলে আপনার মনে হবে যেন সময় এদের অনুসারে এগিয়ে চলেছে !

তারপর এ যেই জায়গাটায় গেলাম, বলা যায় সেটাকে পৃথিবীর কড়াই ! আমাদের বাড়িতে কড়াই এ যেমন তেল ফোটে, ঠিক সেইরকম এই কড়াই এ সারাক্ষন পৃথিবীর পিঠ টা ফুটছে ! আর তার থেকে বেরিয়ে আসছে চড়া সালফার এর ঝাঁঝালো গন্ধ মেশানো ধোয়াঁ !

আরেকটা জায়গা দেখে আমার অদ্ভুত সুন্দর লেগেছিলো ! এখানেও যেন মাটির নিচ থেকে সারাক্ষন প্রচন্ড শব্দ করে ধোয়া বেরিয়ে আসছে ! আর তার দুদিক এ দুটো গাছের শুকনো ডাল এমন ভাবে আছে, যেন পাতাল এর প্রবেশ পথ !

পরের জায়গা হলো দুটি জলপ্রপাত ! এই জায়গায় এখানে একটা কে – “Upper Falls” বা “ওপরের ঝর্ণা”, আর অন্যটিকে – “Lower Falls” বা “নিচের ঝর্ণা” বলে ! নিচের ঝর্ণা দেখতে গেলে প্রায় 1 মাইল এর মতো সরু পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে নামতে হয়, যেখানে পাশাপাশি অনেক কষ্টে দুজন যেতে পারেন ! আর মাঝে-মাঝে একটু করে বড়ো জায়গা আছে, যেখানে বসার বন্দোবস্ত করা ! অধিকাংশ ক্ষেত্রে লোকেরা ওই জায়গায় গিয়ে অপেক্ষা করে যতক্ষণ না তাদের বাকি লোকেরা ফিরে দেখা করছে ! তার থেকেও যেটা মারাত্মক হলো, ওপরে ওঠার সময় ! যথেষ্ট খাড়া পথ আবার ওপরে উঠতে হবে ! অনেকেই দেখছি অল্প উঠেই ক্লান্ত হয়ে বসার জায়গায় একটু ভালো করে নিঃস্বাস নিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে ! আমার মতো অবশ্য অনেকেই ক্যামেরার ব্যাগ নিয়ে এসেছেন ! তাদেরটা যদিও আমার থেকে ছোট, কিন্তু – এতো কাছে এসে অন্যতম দেখার জায়গা হাতছাড়া করার কোনো মানেই হয়না ! সুতরাং, আর বেশি কিছু না ভেবে – এগিয়ে চললাম !

বাঁদিকের ছবিটা হচ্ছে “ওপরের ঝর্ণা”, আর নিচেরটা হচ্ছে “নিচের ঝর্ণা” ! এই ঝর্ণা টায় জলের সো-সো শব্দে কান পাতা দেয় ! আপনার পাশের কেও চিৎকার করলেও শুনতে পারা যাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ! এখান থেকে শুরু করে সারা উপত্যকার মধ্যে এঁকে-বেঁকে চলেছে এই নদি !

এছাড়াও, আমরা পরবর্তী জায়গায় এ সময় মতো পৌছালাম – আমাদের দ্বিতীয় দিন এ ! এর নাম হলো – “ওল্ড ফেইথফুল”! এখানে, পৃথিবীর অদ্ভুত নিয়ম এ প্রায় প্রতি ঘন্টা অন্তর একবার করে মাটি থেকে সজোরে গরম জলীয় বাস্প বেরিয়ে আসে ! তা, ফোয়ারার আকার নেয় ! এবং, এর উচ্ছতাও নেহাত কম হয়না ! প্রায় 30 থেকে 40 ফুট ওপরে ওঠে ! সেই অসাধারণ দৃশ্য দেখার জন্য দেশ-বিদেশ এর বহু পর্যটক অধীর আগ্রহে আমাদের মতোই অপেক্ষা করতে থাকলো ! এবং, সবাই কে তাক করিয়ে দিয়ে ঠিক সময় মতো সেই ফোয়ারা বেরোতে লাগলো ! কার নির্ভুল ঘড়ির কাঁটায় এই কান্ড ঘটে? এ এক অদ্ভুত রহস্য !

ওপরে এই ছবি দুটো আমার সেই স্মৃতিকেই বারবার তাজা করে ! এই ধরণের অভিজ্ঞতা তো সহজে উপলব্ধি হয়না, যা আপনার কাছে সারা জীবনের মতো থেকে যাবে !

সব শেষের জায়গাটি হলো – “মর্নিং গ্লোরি পুল” ! এই জায়গাটার দৃশ্যত হার্ট আকার এর জন্য প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে এটি অতি প্রিয় ! একে আপনি গ্রান্ড প্রিজমএটিক এর ছোট সনস্করণ বলতে পারেন ! তবে, এর নীলাভ রংটি ভীষণ ভাবে লোকজনের মনকে টানবে ! আর, ততই বিষাক্ত !

আমার এই সফরেই এতো কিছু দেখলাম, যা আগে কখনো দেখিনি ! প্রকৃতির রূপ যে এক ই সঙ্গে সুন্দর আর ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা নিজের চোখে না দেখলে যেন বিশ্বাস ই করা যায়না !

এর পর ই, আমার পরবর্তী এডভেঞ্চার শুরু হবে – “গ্রান্ড টেটোন” পাহাড় ও তার চারপাশের উপত্যকা আর তার চারপাশের জঙ্গল নিয়ে !

আপনারা আপনাদের মতামত জানান – এই পোস্ট টি তে ! আমি আশা করে থাকবো আপনাদের মন্তব্যের !

তাহলে ! আবার দেখা হবে !

        Subscribe বোতাম এ ক্লিক করুন আপনার ইমেইল দিয়ে, ও আরো অনেক ছবির সাথে ঘুরতে যাওয়ার গল্প পড়ুন !