NASA – ছোট্টবেলার সেই রোমাঞ্চ কে সামনে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা:
আমার জীবনে রোমাঞ্চের মানে টা যার থেকে খুলে গেছিলো, সেই জায়গার নাম হলো – NASA ! এই ঘুরতে যাওয়া যে শুধুমাত্র আমেরিকা তে আমার প্রথম নতুন শহরে পারি দেওয়াই নয়, আমার ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলোকে নতুন করে তাজা করে দেওয়ার এক অপূর্ব মুহূর্ত বটে !
2014 তে আমি থাকতাম রিচমন্ড বলে একটা শহর এ, যা ভার্জিনিয়া রাজ্যে এর রাজধানী ! আমরা, যাওয়ার প্রায় মাস তিনেক আগে থেকেই অনেক ফোন কল, ভিডিও কল আর কনফারেন্স করে হোটেল, প্লেন ও ভাড়া গাড়ি টিকেট কিনে রাখলাম ! এ প্রসঙ্গে আমার একটু বলে রাখা ভালো যে, খুব ছোটবেলায় আমায় বাবা একটি খুব দামি বিদেশী এক মহাকাশ বিজ্ঞান এর বই উপহার দিয়েছিলেন, যেখানে ছবি সহযোগে আমেরিকা ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া এর মহাকাশ বিজ্ঞান এর বিকাশ এর কথা বর্ণনা ছিল ! তাতে, এও লেখা ছিল যে কি করে মার্কিন মহাকাশচারী পৃথিবী থেকে সুদূর চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন ! শুধু তাই নয়, তারা চাঁদ থেকে যে কিছু পাথর ও এনেছিলেন, তার বর্ণনাও ছিল ! সুতরাং, এমন একটা জায়গায় যাওয়ার কথা হলে, আমার উত্তেজনা চেপে রাখাটা যে কত কঠিন আশা করি তা এতক্ষনে আপনারা বুঝতে পারছেন ! তাই, সুযোগ বুঝে প্রস্তাব ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে তীব্র সমর্থনে ওই জায়গা যাওয়ার কথা পাকা হয়ে গেলো !
শুধু, একটা দুশ্চিন্তা ! ভালোয়-ভালোয় যাওয়াটা হয়ে গেলেই মনে শান্তি পাই !
সেই কথা মতো দিন এগিয়ে এলো, মে মাস এর 10 তারিখ এ দুপুরের খাবার খেয়ে এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম ! আমার সাথে একটাই জামা-কাপড়ের ছোট ব্যাগ যা নিয়ে সহজেই প্লেনের ভেতরে ওঠা যাবে ! আর, রয়েছে আমার নতুন কেনা নিকন ডিজিটাল ক্যামেরা ! ঠিক সময় মতো দুপুর 3 টে নাগাদ, রিচমন্ড এয়ারপোর্ট থেকে প্লেন টা ছাড়লো !
আমি সরাসরি রিচমন্ড থেকে অরলান্ড যেতে পারবো না ! আমাকে পথে শার্লট এ নেমে, সেখান থেকে আরেকটা বিমান এ যেতে হবে ! তাই, সেই জন্য শার্লট এ আমি উৎপল এর সঙ্গে দেখা করে, আমরা দুজনে ওখান থেকে এক ই বিমান এ যাবো ! কারণ, চাকরি সূত্রে উৎপল শার্লট এই থাকতো ! আমি স্থানীয় সময় সন্ধে সাড়ে 5 টায় শার্লট এয়ারপোর্ট এ নামলাম ! নেমে উৎপলকে একটা মেসেজ করে দিলাম ! তারপর, একটু ফ্রেশ হয়ে একটা কফি নিয়ে বসলাম ! বসার, 10 মিনিটের মধ্যে উৎপল এসে হাজির হলো !
তারপর, আমরা দুজনে মিলে পরের লেগ টা রওয়ানা দিলাম ! এর মধ্যে আমি প্লেনেই দেখে নিলাম – “অ্যাপোলো এর মহাকাশ অভিযান”, মনে হলো ছোটবেলার স্মৃতিগুলো আবার সতেজ হয়ে গেলো !
অবশেষে, রাত 9 টায় পৌছালাম অরল্যান্ডো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এ ! আমরা পৌঁছানোর প্রায় 10 মিনিটের মধ্যে বাকি সবাই এসে পৌছালো ! বহুদিন পরে সবার সাথে দেখা হয়ে উন্মাদনা যেন আরো কয়েক গুন্ বেড়ে গেলো ! অবশেষে, রাত 10 টায় দুটো গাড়ি ভাড়া করে আমরা সবাই দুটো গাড়িতে ভাগ করে হোটেল এর দিকে রওয়ানা দিলাম ! আমাদের এই গাড়িতে প্রায় পাঁচ জন আর অন্য গাড়িতে বাকি পাঁচ জন ছিল ! রাত 11 টায় গিয়ে আমরা পৌছালাম আমাদের হোটেল এ ! হোটেল টা NASA এর খুব কাছেই ! তাই, সকালে একটু রেস্ট নিয়ে বেরোবো ! হোটেল এ পৌঁছে আমি একটু গরম জল এ স্নান করে নিয়ে খেতে-খেতে পরের দিন এর পরিকল্পনা সেরে নিলাম !
সেই দিন রাত টা যেন কিছুতেই ঘুম ই আসছিলো না ! খুব সম্ভবত ঘন্টা দুয়েক ঘুমোতে পেরেছি উত্তেজনার চোটে ! কোনোরকমে, ভোর 6 টা অব্দি কাটিয়ে সটান বাথরুম এ গিয়ে স্নান করে সকাল সাড়ে 7 টার মধ্যে তৈরী হয়ে গেলাম ! নিজেকে তখন ঠিক ফুটন্ত আগ্নেয়গিরি মনে হচ্ছিলো ! বাইরেটা শান্ত, কিন্তু ভেতরে উথাল-পাথাল হয়ে চলেছে ! শেষটায়, সকাল 9 টায় আমরা সবাই “কেনেডি স্পেস সেন্টার” এ রওয়ানা দিলাম !
আমাদের যাওয়ার পথটা ভীষণ সুন্দর ছিল ! হাইওয়ে এর পাশে বয়ে চলেছে জলের ছলাক-ছলাক শব্দ !
আমরা আধ ঘন্টার মধ্যে ওখানে পৌঁছে গেলাম ! আমাদের গাড়িটাকে পার্কিং এ রেখে ওখান থেকে হাঠতে-হাঠতে গেট এর দিকে এগিয়ে চললাম !
একটু এগিয়ে যেতেই চোখের সামনে “Welcome” ফলক টা দেখতে পেলাম ! সেখান থেকেই দেখলাম দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটা পেল্লাই রকেট এর মডেল !
এরপর, টিকেট কাউন্টার এর কাছে গিয়ে আমাদের অনলাইন এ কাটা সব তত্থ দিয়ে টিকিট জোগাড় করলাম ! তার সঙ্গে আমরা একটি অত্যন্ত সুন্দর একটা চটি বই পেলাম, যাতে ওই দিন সব শো, একটা ম্যাপ ও অন্নান্ন দরকারি তত্থ দেওয়া আছে !
এরপরে, আমাদের লাইন দিয়ে ভেতরের গেট এর সামনে দাঁড়াতে হলো ! ঐখানে, সবার ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিস ভালো করে পরীক্ষা করে ক্যাম্পাস এর ভেতরে যাওয়ার অনুমুতি পাওয়া গেলো ! সত্যি কথা বলতে কি, তখন যেন আমি একটা অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে চলে গেছি ! যে জায়গার গুরুত্ব সকল মানুষদের মধ্যে এতো বড়ো, যার কথা আমি ছোটবেলায় বড়োদের মুখে-মুখে বহুবার শুনেছি, সেই জায়গায় যে কোনোদিন নিজে পা রাখতে পারবো, তা যেন বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছিলো ! সঙ্গে আমার অত্যন্ত কাছের লোকেদের কেও খুব মিস করছিলাম ! এইবারে, আরেকটু এগিয়ে যেতেই চোখে পড়লো সেই বিখ্যাত নাসা এর লোগো !
আরো কিছুদূর এগোতেই চোখে পড়লো একটি ফোয়ারা ! এবং তার দেওয়াল এ লেখা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জন. ফ. কেনেডি এর কিছু বিখ্যাত কথা !
এরপরে, আমরা আমাদের বাস টুর এর দিক এ এগোতে থাকলাম ! তখন, খুব কাছ থেকে প্রকান্ড রকেট গুলোর মডেল দেখার সৌভাগ্য হলো !
বাঁদিকের ছবিটা প্রথম দিকের কিছু মডেল কে আদল করে গড়া হয়েছে ! কিন্তু, এইগুলি অপেক্ষাকৃত পুরোনো ! নিচের মডেলগুলি নতুন !
আমাদের কে সকাল 11 টার মধ্যে বাস টুর টা নিতে হবে ! তাহলেই, আমরা দুপুর 2 টোর মধ্যে শেষ করে ফিরতে পারবো ! কারণ, দুপুর আড়াইটে তে আছে সেই বিশেষ অনুষ্ঠান – “অ্যাপোলো 11 চাঁদের যাত্রা” ! সেই, পরিকল্পনা মতো আমরা বাস এ চড়ে বসলাম ! বাস এর ড্রাইভার ও গাইড আমাদের কে নাসা এর মধ্যে বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখতে লাগলো ! আমরা অ্যাপোলো মুন মিশন এর সেই জায়গা দেখলাম, যেখানে কাউন্টডাউন এর ঘড়ি লাগানো ছিল ! যার দিকে সেইদিন সবার চোখ ছিল ! তার সঙ্গে অ্যাপোলো এর সেই বিখ্যাত লঞ্চপ্যাড ! এ হলো সেই জায়গা, যেখান থেকে রকেট উড়ে গেছিলো তিনজন মহাকাশ্চারীকে নিয়ে চাঁদের পাহাড়ে !
আরো কিছুদূর যেতে দেখতে পেলাম বিরাট এক গোম্বুজাকৃতি আকারের এক ট্যাঁক, যেখানে রকেট ওড়ার জ্বালানি তরল হাইড্রোজেন রাখা আছে !
এর মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ্য করছিলাম, যে প্রায় অনেক বাড়ির আশেপাশেই জলাভূমি রয়েছে ! এবং সেগুলো কাঁটাতার দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে ঘেরা ! আমাদের গাইড বলে উঠলেন, বাইরের থেকে কেও অসৎ উদ্দেশে পাঁচিল টপকে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের প্রাণ খোয়া যেতে পারে, কারণ এই সব জলে কুমির ও আরো অনেক বিষাক্ত প্রাণী ছাড়া আছে ! খুব স্বাভাবিক ভাবে এরাই অধিকাংশ জায়গাকে কে পাহারা দিতে সাহায্য করে ! আমরা যেতে-যেতে সেরকম ই এক কুমির কে জলের মধ্যে দেখতে পেলাম !
এরপরে, যেখানে গেলাম সেখানে নাসা তার পাইলট দের নানারকম মাধ্যাকর্ষের এর সঙ্গে যুক্ত শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয় ! এই জায়গায় প্রবেশ নিষেধ ! তাই, দূর থেকেই দেখা হলো !
ঠিক 2 টোর মধ্যে আমাদের বাস টুর শেষ হলো ! হাথে রয়েছে আর আধ ঘন্টা ! প্রায় দৌড়াতে-দৌড়াতে আমরা পৌছালাম আমাদের শো এর ঠিকানায় ! এই জায়গাটায় হলো সেই কন্ট্রোল রুম, যেখান থেকে নাসা এর চাঁদের মহাকাশ পারি পরিচালনা করা হয়েছিল ! এখন, পর্যটকদের জন্য পিছনের সারিতে কিছু বসার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে !
জায়গাটার সামনে আছে সব কন্ট্রোলার দেড় নিজস্সো কম্পিউটার ও কন্ট্রোল টার্মিনাল ! সাধারণত, সেখানে বসেই সেই সময়ে বিজ্ঞানীরা তাদের এই মহাকাশ পারি কে পরিচালনা করেছিলেন ! আজ হয়তো তাদের মধ্যে কেও নেই ! কিন্তু, তাদের বাকি সব কিছু যেন সেদিনের ইতিহাস কে সাক্ষী রাখে !
কিছুক্ষনের মধ্যে চারিদিক অন্ধকার করে শো শুরু হলো ! শুরু হলো মহাকাশ যাত্রার দিন থেকে ! হঠাৎ ই শব্দ যন্ত্রে ভেসে উঠলো কন্ট্রোলার এর গলা ও এক ই সাথে তিন মহাকাশচারীর গলা ! আর, সামনের দিক এ বিশাল তিনটে পর্দায় তিনটে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে ! একটাতে, মহাকাশচারীদের কে দেখা যাচ্ছে, অন্যটাতে – বিজ্ঞানীদের ও শেষটিতে রকেট এর ! তার থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, যখন যে বিজ্ঞানী বা কন্ট্রোলার কথা বলছেন, তখন তার বসার জায়গাটিতে আলো ফোকাস হয়ে পড়ছে ! যেন, চোখের সামনে আমরা আরো একবার ইতিহাস এর সাক্ষী হতে চলেছি ! এ জিনিস না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না ! সত্যি কথা বলতে কি আমার সারা গায়ে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছিলো ! এইবার বড়ো পর্দায় দেখলাম রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যানটি চাঁদের মাটিতে নামলো ! ঠিক তখন পর্দার বাইরে হলের ওপর থেকে ওই যান এর ই আদলে গড়া একটা যান ওপর থেকে হল-এর মাটিতে নেমে এলো ! এক মুহূর্তেই আমরা সবাই পৃথিবী ছেড়ে চাঁদের বুকে চলে গেছি সেই দৃশ্য উপভোগ করবো বলে !
এরপর ই দেখা গেলো, সেখান থেকে মহাকাশ যাত্রীর বর্ম পরে বেরিয়ে এলেন একজন মহাকাশচারী ! পুরো শো টা দেখে আমরা সবাই তাজ্জব বনে গেলাম ! আর, মনে-মনে সিকার করতে বাধ্য হলাম যে – “এরা জানে ! মানুষকে কিকরে কোনো কিছুতে আকর্ষিত করতে হয় !”
এরপর, এই শো টা দেখে বেরিয়ে এসেই পড়লাম আরেকটা জাদুঘর এর মধ্যে ! যেখানে, অ্যাপোলো তে ব্যবহৃত ও পৃথিবীতে ফিরে আসা সেই বাহন কে রাখা আছে, যা প্রশান্ত মহাসাগর এ অবতরণ করেছিল ! এছাড়াও, মহাকাশচারীদের দৈনন্দিন ব্যবহারের বহু জিনিস ও প্রদর্শনীতে ছিল !
তবে সব থেকে আকর্ষণীয় যে বিষয়টা হলো, চাঁদের থেকে আনা পাথর ! এই পাথরকে জনসাধারণের জন্য রাখা হয়েছে এমনভাবে, যে লোকে তা ছুঁয়ে দেখতে পারে ! কিন্তু, কেও তাকে নিয়ে যেতে পারবে না ! মনে হয় এই পৃথিবীতে, খুব কম লোকের এই সুযোগ আসে, যে চাঁদ থেকে আনা পাথরকে ছুঁয়ে দেখতে পেরেছে ! সৌভাগ্যক্রমে, আমি সেই দলে সেইদিন নাম লেখাতে পেরেছি ! এই অভিজ্ঞতা সারাজীবন আমার সাথে রয়ে যাবে ! এই জায়গাটার এমন এ বিশেষত্ব, যে প্রায় প্রতিটা জিনিস থেকেই আমরা কিছু না কিছু শিখছি – “বিজ্ঞান ও ইতিহাস” !
এরপরে, আমরা পাশের জাদুঘর এ গিয়ে এক প্রকান্ড আসল স্যাটার্ন পাঁচ রকেট দেখলাম ! এইরকম ই এক রকেট তিন মহাকাশ্চারীকে নিয়ে চাঁদের দেশে পারি দিয়েছিলো !
এর পাশে ছিল, চাঁদের বুকে ঘুরেফেরার সেই বিখ্যাত গাড়ি, যা দুই মহাকাশচারী চালিয়ে বেরিয়েছিলেন – তার ই আদলে আরেকটি প্রতিকৃতি !
সব শেষে আমরা পৌছালাম “শাটল শো” তে ! এখানে প্রবেশ করে আমরা অনেক তত্থ পেলাম শাটল এর সম্পর্কে ! শাটল হলো অপেক্ষাকৃত একটি নতুন পদ্ধতি যেখানে প্লেন এর মতো একটা জানকে রকেট এর পিঠে বেঁধে মহাকাশে পাঠিয়ে দেওয়া ! তার কারণ হলো, কোনো একটা রকেট এর প্রধান কক্ষ কে রক্ষণ-বীক্ষণ এ অনেক সময়ে নানানরকম সমস্যা দেখা দেয় ! তার ওপর, পৃথিবীতে ফেরার সময় সেই যান এর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ ই অধিকাংশ সময়ে পুরপুরি থাকেনা ! সেখানে, প্লেন এর মতো যানটি যেকোনো এয়ারপোর্ট এর মতো জায়গায় খুব সহজে উড়ে এসে নেমে যাবে ! তাকে খুঁজতে আলাদা করে কোনো লোকবল ও লাগবে না ! আর, এর অধিকাংশ যন্ত্র ও প্রধান কক্ষ বিমান এর সাথে মেলে ! তাতে, পাইলট দেড় পক্ষেও সেটা শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ ! এর সঙ্গে জানতে পারলাম, কোন সময়ে থেকে এই প্রোগ্রাম শুরু হয় ও কেন একে আজ বাতিল করতে নাসা বাধ্য হয়েছে ! এই প্রোগ্রাম এর শেষে হঠাৎ ই পাশের এক দরজা খুলে গেলো ! চোখের সামনে ভেসে উঠলো সত্যি সেই শাটল – “অ্যাটলান্টিস” ! আমি বহুবার CNN এর পর্দায় একে দেখেছি ! কিন্তু, এইভাবে চাক্ষুস দেখতে পারবো, ছুতে পারবো – এতো স্বপ্নের ই অতীত ! সেইদিন কের এই সফরটা যেন আমার জীবনের মোড়টাই ঘুরিয়ে দিয়ে এক অন্য মাত্রা জুড়ে দিলো !
আমাদের সঙ্গে যারাই গেছিলো, সেদিন প্রত্তেকে হতবাক হয়ে গেছিলো বিস্ময়ে ! সবাই ছবি তুলতে তখন ব্যাস্ত ! আমি যেন আমার সেরা সময়টা উপভোগ করে চলেছি ! বিশেষ কিছু মুহূর্ত কে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ! এ যেন আমার স্বপ্ন পুরান !
অবশেষে, শো এবং জাদুঘর থেকে বেরোনোর পর প্রত্যেকেই টের পেলাম কি প্রচণ্ডই না খিদে পেয়েছে সবার ! পাশেই থাকা এক রেস্টুরেন্ট এ ছুটে গেলাম ! আমি একটা ক্লাৱ স্যান্ডউইচ ও পেপসি নিলাম ! যেন ধরে একটু প্রাণ ও ফিরে পেলাম !
তাই, আমার এই যাওয়াটা যেন অন্য আর পাঁচটা যাওয়ার থেকে অনেক আলাদা ! শিক্ষণীয়, কিন্তু কত সুন্দর ! যা ভাষায় প্রকাশ করা খুব ই মুশকিল ! যেন ছোটবেলার মহাকাশ পত্রিকার রঙিন পাতাগুলো এতো বছর পরে জীবিত হয়ে আমার সামনে মেলে ধরেছে !
এরপরের, পোস্ট এ আমি তার পরের যাওয়ার কথা লিখবো ! আপনারা জানাবেন কেমন লাগলো আমরা এই অতীতের অভিজ্ঞতা ! অপেক্ষায় রইলাম !
Subscribe বোতাম এ ক্লিক করুন আপনার ইমেইল দিয়ে, ও আরো অনেক ছবির সাথে ঘুরতে যাওয়ার গল্প পড়ুন !
Comments
Sonali Pal