তাহোতে তুষার জয়

তুষারে ঢাকা তাহো: |
বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা ভাবছিলাম কোথাও একটু ঘুরে আসা যাক ! ক্যালিফোর্নিয়াতে সবে ঠান্ডাটা একটু কমে বসন্তকাল পড়েছে ! আর, তার সঙ্গে সবে ফেলুদার “গ্যাংটকে গন্ডগোল”-টা আরেকবার শেষ করলাম ! তাই, মনটা খুব পাহাড়-পাহাড় করতে লাগলো !
যদিও, সান-রামোন পাহাড়ের গায়ে, তবুও এখানে চট করে বরফটা ঠিক পড়েনা ! তাই, দার্জিলিং বা গ্যাংটকের ওই ফিলিংটা এখান থেকে পাওয়া যাবে না ! সেটা পেতে হলে হয়তো উত্তরে মাউন্ট শাস্তাতে যেতে হবে, নাহলে পাশের রাজ্যে নেভাডাতে ! শুনেছি, নেভাডাতে থাকা লেক তাহোতে নাকি বহুলোক এই সময়ে স্কি করতে যায় ! সব থেকে মজার ব্যাপার হলো, নেভাডা এর রাজধানী রেনোতে আবার আমার এক বন্ধু থাকে, যদিও বয়সে আমার থেকে ছোট ! ওতো বহুবার এর আগেও আমাদেরকে যেতে বলেছিলো ! তাই, আমি যখন কথাটা পারলাম – এক কথায় ও রাজি হয়ে গেলো ! ও, ওখানে ইউনিভার্সিটি থেকে সেই সময়ে পিএইচডি করছিলো ! আর, রেনো যেতে গেলে বড়ো ছুটিও লাগবে না ! শনি আর রবি মিলিয়ে গোটা আর তিনদিন নিয়ে নিতে পারলে হয়ে যাবে ! সেই মতো, সমস্ত ব্যবস্থা করে হোটেল আর যাতায়াতের টিকেট কেটে ফেললাম ! তবে, যাওয়াটা একটু স্পেশাল ভাবে হবে ! সান-ফ্রান্সিস্কোর আমেরিভিলের থেকে ক্যালিফর্নিয়া জইফের ট্রেন নিয়ে সেখান থেকে সমতলভূমি, মালভুমি আর উপকূল সমুদ্রের জঙ্গল ফেলে একটু-একটু করে পাহাড়ের কোলে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে ছুটবে ! শুনলাম, তার অভিজ্ঞতা নাকি একদম আলাদা ! আর, যেটা বিশেষত্ব হলো – একজনের টিকেট এর দাম, প্লেন এর টিকেট-এর প্রায় তিনগুন ! অনেকটা, আমাদের দেশে রাজস্থানে থাকা – “প্যালেস ওন হুইলস” এর মতো ! আর, এখানে বুকিং করার পর টিকেট কনফার্ম হলে একটা বুকলেট ও পাঠিয়ে দেওয়া হলো ! একটা জিনিস মনে রাখতে হবে – এটা লাক্সরি ট্রেন ! তাই, এখানে জামা-কাপড়ের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে ! |
প্রথম দিন: |
শেষ পর্যন্ত, দিন চলে এলো ! ভোর বেলায় উঠে তাড়াতাড়ি স্নান করে সাড়ে চারটের মধ্যে দুজনে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ! গন্তব্য – আমেরিভালি স্টেশন ! আমাদের উবের এর ড্রাইভার রাস্তা ফাঁকা থাকাতে প্রায় দেড়শো মাইল এর বেগে ছুটে চললো ! চল্লিশ মিনিট এর মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম ! এরপর, লাগেজ সিকিউরিটি চেক-ইন করে আমরা ট্রেন এর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম !
ঐদিনটা একটু ঝির-ঝির করে ভোরে বৃষ্টি পড়ছিলো ! মিনিট কুড়ি-এর মধ্যে আমাদের ট্রেন এসে পড়লো ! এই ট্রেনটার একটা বিশেষত্ব হলো, একটা কামরা থেকে অন্য কামরায় চলে যাওয়া যায় ! আর, পুরো ট্রেনটাই রিসার্ভ করা ! অর্থাৎ, যে কোনো ব্যাক্তি চাইলেই ট্রেনের ভেতর প্রবেশ করতে পারবেন না ! আর, তার থেকেও বড়ো এট্ট্রাকশন যেটা, সেটা হলো – দুটো স্পেশাল কামরা আছে যার মাঝখান থেকে মাথাটার অধিকাংশ জায়গা মোটা কাঁচ দিয়ে মোড়া ! এর উদ্দেশ্য হলো – ভ্যালি দিয়ে যাওয়ার সময়ে যাত্রীরা এই জায়গায় এসে বসে সেই দৃশ্য খাবারের সাথে উপভোগ করবেন ! আর, খাবারের জায়গাটাও এর ঠিক পাশেই ! সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে ট্রেন ছেড়ে দিলো ! এরপর, ট্রেনটা উপকূল এর পাশ দিয়ে যেতে-যেতে নানা সমতলভূমি, ব্রিজ, মালভুমি কাটিয়ে এগিয়ে চললো ! খুব কম জায়গায় এই ট্রেনটা থামে ! প্রথম, থামলো স্যাক্রোমেন্টতে ! এই জায়গার আদলটা আমাদের দেশের যেকোনো জংশন স্টেশন এর মতো ! এখানে, মিনিট পাঁচেক থেমে আবার দৌড়াতে শুরু করলো ! এরপর, ট্রেনটা আস্তে-আস্তে পাহাড়ের কোলে উঠতে শুরু করলো ! কিছুক্ষনের, মধ্যে আমরা অবিশাস্য এক ঘটনার সাক্ষী হলাম ! আমাদের যাওয়ার মধ্যে তুষারপাত শুরু হয়ে গেলো ! ট্রেন এর ভেতর থেকে ভ্যালিতে পরা এইরকম তুষারপাত দেখার অভিজ্ঞতা আমার জীবনে প্রথম ! যা সত্যি ভাষায় প্রকাশ করা যায়না ! এযেন, রূপকথার কোনো ক্যানভাস আমার সামনে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ! চারিদিকে তাকালে শুধুই সাদা বরফের চাদরে ঢাকা ! আমার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেলো ! ট্রেনের ভেতরে এক কামরা থেকে অন্য কামরা দিয়ে ট্রেনের শেষ কামরায় পৌছালাম ! শেষ কামরায় একটি কাঁচের জানলা থাকে ! সেই জানলা দিয়ে ট্রেনের গতিপথ আর ভ্যালি এর কিছু ছবি তুলে ফেললাম ! সত্যি বলতে কি সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ! সারা গায়ে যেন বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছিলো ! ট্রেনটা এক-এক করে প্রায় বাইশটা সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে ছুটে চললো ! বেশ কিছুক্ষন ওখানে কাটিয়ে এরপর ঠিক করলাম আমরা কিছু স্নাক্স নিয়ে ট্রেনের সেই বিশেষ বগিতে বসে ভ্যালি টা দেখতে থাকবো ! সেই মতো, আমি একটা বার্গার, ফ্রেঞ্চ-ফ্র্যাইস কিনলাম ! সঙ্গে গলা ভেজানোর জন্য একটা কোক ! কিছুক্ষনের, মধ্যে ট্রাকীর স্টেশন এসে পৌছালো ! এখানে, ট্রেনটি কিছুক্ষন দাঁড়াবে ! সামনের জানলায় অল্প বৃষ্টির ফোঁটায় একটা দারুন সুন্দর দৃশ্য তৈরী হয়ে গেছে ! এখানে, কিছুক্ষন থেকে এবারে ট্রেনটা বেশ বড়ো আঁকা-বাঁকা পথ দিয়ে চলতে শুরু করলো ! মাঝে-মাঝে তো জানলা দিয়ে সামনের দিকের ট্রেনের অধিকাংশটাই দেখা যাচ্ছিলো ! ঠিক বিকেল পাঁচটার মধ্যে আমরা রেনো পৌঁছে গেলাম ! আমাদের দুর্দান্ত ট্রেন সফর সেই বারের মতো শেষ হলো ! এইবার, আমরা উবের নিয়ে হোটেল এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম ! এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, লাস-ভেগাস হওয়ার আগে রেনো শহরেই যাবতীয় গ্যাম্বলিং হতো ! ভেগাস চালু হওয়ার পর থেকে এর গুরুত্ব অনেকখানি কমে যায় ! হোটেল এ ঢুকে ফ্রেশ হয়ে আমার বন্ধুকে ফোন করলাম ! ঠিক করা হলো – ও এসে কাছাকাছি কয়েকটা জায়গায় আমাদের ঘুরিয়ে আনবে ! সেই মতো, ও এসে পড়ায় ওর গাড়িতে করে রেনো শহরটা ঘুরে দেখতে লাগলাম ! সত্যি কথা বলতে কি – চারপাশ দেখে বোঝা যাচ্ছে – এক সময়ের লাস্যমই শহর এর এখন দুরাবস্থা চলছে ! সেই জৌলুশ হয়তো আর ততটা নেই ! আমরা ঘুরতে-ঘুরতে দূরে একটা পাহাড়ের ওপর উঠলাম ! যেখান থেকে রাতের রেনো শহরটা কে দেখা যায় ! তবে, আমার কিন্তু এই ছবিটা খুব ইন্টারেষ্টিং লাগে ! এক সময়ের জৌলুশ যেন আজ কোথায় হারিয়ে গেছে ! অবশেষে, সেই দিন বাইরে ডিনার করে পরের দিনের জন্য হোটেল এ ফিরে এলাম ! কারণ, পরের দিন ভোর পাঁচটায় আমাদের বেরিয়ে যেতে হবে ! |
দ্বিতীয় দিন: |
ভোর বেলা উঠে স্নান করে হোটেল এর লবিতে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম ! এরপর, আমার বন্ধু গাড়ি নিয়ে আসার পর বেরিয়ে পড়লাম ! দিনটা শুরু হলো কিন্তু ভীষণ সুন্দর মেজাজে ! ঝকঝকে রোদ উঠেছে !
আর, দূরে দেখা যাচ্ছে তাহো এর পাহাড়ের চুড়ো ! যদিও, পৌঁছাতে লেগে গেলো প্রায় ঘন্টাখানেক ! যদিও, তার মধ্যে আমরা সবাই আড্ডা জুড়ে দিলাম ! আর, যেতে-যেতে টুকটাক খাওয়া ! এইবার, ধীরে-ধীরে পাহাড় এর ওপরে উঠতে শুরু করেছি ! এর, মধ্যে আগের দিনের বরফ পরে থাকায় অনেক জায়গায় সাদা চাদর দেখা যাচ্ছিলো ! আর, কয়েক জায়গায় আমাদের মনে হচ্ছিলো গাড়িটা একটু স্কিড্ করছে ! তাই, এবারে দীপ গাড়িকে “অল হুইল” বা “চার চাকার” ড্রাইভ এ কনভার্ট করে চালাতে থাকলো ! সাধারণত, সমতল এলাকায় যেসব গাড়ি আমরা চালাই, সেটা “টু-হুইল” ! পাহাড়ি এলাকায় সেই গাড়ি নিয়ে ওপরে ওঠা যায় না ! তাই, আমেরিকাতে প্রায় অনেক গাড়িতে এইরকম ব্যবস্থা থাকে – যেখানে শহরে কম জোর লাগায় ওখানে “টু-হুইল” এ চলবে ! আর, পাহাড়-এ গেলে ওই বিশেষ অপসন লাগিয়ে চালাতে হবে ! কিছুক্ষন, চলার পর বরফ পড়তে শুরু করলো ! এবং, একটা সময়ে রাস্তায় আর কিছু দেখা যাচ্ছে না ! একদিকে পাহাড়, অন্য দিকে প্রায় পাঁচ হাজার ফিট গভীর খাদ ! পড়লেই শেষ ! তাই, একটা বাঁক দেখে আমরা গাড়িটাকে পাশে দাঁড় করতে গিয়ে দেখি সামনে আরো অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে ! সত্যি কথা বলতে কি – ওটা দেখে মনে একটু জোর এলো ! তারপর, বাইরে ঠান্ডার মধ্যে বেরিয়ে জিজ্ঞাসা করতে জানা গেলো রাস্তায় বরফ পরে আটকে গেছে ! স্পেশাল টীম এসে কন্ট্রোল্ড এক্সপ্লোশন করে রাস্তা থেকে বরফ সরাচ্ছে ! যদিও, এই এলাকার চারপাশটা ভীষণ সুন্দর ! প্রায়, মিনিট পনেরো থাকার পর রাস্তা খালি হলো ! আমরা আমাদের “লেক তাহো” এর ফেমাস স্পট এর দিকে এগোতে থাকলাম ! এই জায়গাটা এক কথাই অনাবদ্য ! একদিকে, পাহাড়ের কোলে দাড়িয়ে নিচে লেক তাহোর অপূর্ব নীল রং যেন ওপরের চারপাশের বরফকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে ! এইরকম, জলের নীল রং আমি আগে কখনো দেখিনি ! আবার, জায়গাটা সমুদ্র থেকে প্রায় পাঁচ হাজার ফিট ওপরে ! সুতরাং, প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা কালীন কোনো অসাবধানতা পালন করা যাবে না ! এইখানে, প্রায় মিনিট পনেরো কাটানোর পর ঠান্ডার চোটে সবাই আবার গাড়িতে ঢুকে হিটার চালিয়ে পরের গন্তব্যে এগোতে শুরু করলাম ! এই পরের জায়গা হলো তাহো এর পশ্চিমে ! যাওয়ার পথের রাস্তা অধিকাংশ রাস্তা এক লেন এর ! তার একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে খাদ আর তার পাশে তাহো এর নীল জল ! প্রায়, এক ঘন্টা চলার পর তাহোর জলের কাছে এসে পৌছালাম ! যখন, বিচ এর কাছে এসে পৌছালাম – জলের রং দেখে চমকে উঠলাম ! কি সুন্দর এর রং ! পারে দিকে সোনালী সবুজ, আর দূরে গভীর নীল রং ! সামনে, একটা কাঠের পাটাতন রাখা আছে ! সেই খান থেকে ছোট ক্রুসে করে গোটা লেক তাহো ঘুরে দেখা যায় ! যদিও, আমাদের কাছে অত সময় ছিল না ! আর, তাছাড়া খুব খিদেও পেয়ে গেছিলো ! তাই, কাছে একটা রেস্টুরেন্ট থেকে লোকাল ফুড খেয়ে আবার রওয়ানা দেওয়া হলো ! এইবার, আমরা যাবো ট্রাকি নদীর কাছে ! ট্রাকি নদীটা ভীষণ সুন্দর ! জলের রং সবুজ ! এর, আগে মাত্র একবার-ই দেখেছি নদী এর রং এরকম ! সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গে রানাঘাটের পরে চূর্ণী নদী ! তার ও রং এইরকম ! এই জায়গাটা, একদিকে রুক্ষ-সুক্ষ পাহাড় – অন্যদিকে বয়ে চলা ট্রাকি নদী ! এইখানে, আমরা ঘন্টা দুয়েক ট্রেকিং করে আমরা ফিরে এলাম ! কাছে স্টারবুকস থেকে চা আর স্যান্ডউইচ খেয়ে আমরা রেনো ন্যাশনাল পার্ক-এ চলে এলাম ! এই জায়গাটাও খুব সুন্দর ! তবে, খুব ভালোভাবে সংরক্ষিত ! এরপর, আমরা হোটেল এর দিকে ফিরতে শুরু করলাম ! গাড়ি থেকে দূরের আলোর ঝর্নায় সাজানো রেনো শহরটা দেখতে বেশ ভালোই লাগছিলো ! আর, তার মধ্যে আমাদের হোটেলটার সবুজ আলো তাকে বাকি সবার থেকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে ! হোটেল এ ফিরে একটু রেস্ট নিয়ে তারপর ক্যাসিনোর মধ্যে ঘুরতে থাকলাম ! এই প্রথম দেখলাম ক্যাসিনো ও তার চারপাশের নানারকম মেশিন ! কত্ত আওয়াজ, লোকজনের ব্যাস্ততা ! এই পরিবেশ মনোরম করার কোনো ত্রুটি যেন রাখা হয়নি ! এই পরিবেশ প্রথমবার দেখে আমার সত্যজিৎ রায় এর লেখা “যতকাণ্ড কাঠমান্ডুতে” এর সেই ক্যাসিনোর দৃশ্য যেখানে লালমোহন বাবু এর বিস্ময় ভরা সেই অভিজ্ঞতার দৃশ্য মনে পরে গেলো ! মনে পরে যাচ্ছে অনুপ কুমার এর সেই দৃশ্য যেখানে এক টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা জেতার উন্মাদনা ! দূরে, একটা জায়গায় আবার দেখলাম খুব সুন্দর পুরোনোদিনের ব্যবহৃত পাত্র অকশন-এ কিনে সাজানো আছে ! প্রতিটা কাঁচের পাত্রতে কাজ দেখলে সত্যি অবাক হয়ে যেতে হয় ! এরপর, রাতে সেদিন বন্ধুদের সাথে ডিনার করে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম ! পরের দিন, সকালে আমাদের ভোরে উঠে ফিরতে হবে ! আমার এই ঘোরাটা খুব ছোট হলেও এতো অল্প সময়ে অসামান্য সব অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম যা সারা জীবন আমার সাথে থেকে যাবে ! আশা করি – আপনাদের এই ঘোরার অভিজ্ঞতাটা ভালো লাগবে ! আর, প্রার্থনা করি সবাই ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন ! |
Subscribe বোতাম এ ক্লিক করুন আপনার ইমেইল দিয়ে, ও আরো অনেক ছবির সাথে ঘুরতে যাওয়ার গল্প পড়ুন ! |